নারায়ণগঞ্জ টুয়েন্টিফোর ডটকম:
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত হত্যাকান্ডের চার বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালতে একটি মামলায় হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের লামাপাড়া এলাকা থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবি চন্দন সরকার সহ সাতজন। তিনদিন পর ৩০ এপ্রিল ও ১ মে অপহৃত এই সাত জনের লাশ একে একে ভেসে উঠে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষা নদীর শান্তির চর এলাকায়। আলোচিত এই হত্যাকান্ডটি এক সময় এদেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশী গণমাধ্যম গুলিতে শিরোনাম হয়ে উঠে। আর এই সমালোচনার ঝড় তোলার প্রধান কারণ হয়ে উঠে এ হত্যাকান্ডের সাথে সে সময় এ জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা র্যাবের তিন কর্মকর্তা (লে. কর্নেল তারেক সাঈদ, লে. কমান্ডার এম.এম রানা, মেজর আরিফ) ও হত্যা সহ একাধিক মামলার আসামী সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি নূর হোসেনের জড়িত থাকার ব্যাপারটি।
মামলা ও আদালতের রায়:
অপহরণের ঘটনার একদিন পর কাউন্সিলর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় ৬জনকে আসামী করে ফতুল্লা থানায় মামলা করেন। এছাড়া আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পালও একই থানায় পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তিতে ২০১৬ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ মোট ৩৫ জনকে আসামী করে চার্জ গঠন করে। পুলিশের চার্জশীট গ্রহন করার পর ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারী নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দ এনায়েত হোসেন ৩৮টি কর্মদিবসে ১০৬ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণের মাধ্যমে বহুল প্রতীক্ষিত এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে প্রধান আসামী নূর হোসেন ও সাবেক তিন র্যাব কর্মকর্তাসহ ২৬ আসামির মৃত্যুদন্ড এবং বাকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান করেন আদালত। পরবর্তীতে আসামীপক্ষ এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল করে। ২০১৭ সালের ২২ আগষ্ট উচ্চ আদালতের রায়ে নূর হোসেন, র্যাবের তারেক সাঈদ, আরিফ হোসেন ও এম এম রানা সহ ১৫ জনের মৃত্যদন্ড, ১১ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করেন। পরে আসামীপক্ষ এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগে আবেদন করে।#